Table of Contents
প্রথম রক্তপাতেই কি সতীত্বের পরিচিয় ?

আমরা যখন কখনো বন্ধুবান্ধব বা ভাবি, ননদ অথবা শিক্ষিত মহলেও নারীর সতীত্ব নিয়ে আলোচনা করি তখন দেখা যায় কেউ কেউ চোখ আকাশে তুলে ফেলে আবার কেউ কেউ প্রশ্ন করে নারীর সতীত্ব আছে কি বা নেই কিংবা থাকলে তার প্রমাণ কী শুধুই প্রথম সেক্সের সময় রক্তপাতের ঘটনাতেই বুঝা যাবে?
নয়তো কিভাবে বুঝবো?
যদিও আমাদের সমাজে নারী পুরুষ সবাই প্রথম সহবাসে রক্তপাত নিয়ে নারীর সতীত্ব যাচাই করার প্রথাতেই বিশ্বাসী বহু আগ থেকে এবং এটা প্রসিদ্ধ!এবং অনেক নারী ও পুরুষ উভয়ের এই ধারণাকে সত্য ও সঠিক বলে মনে পোষন করেন। অথচ এটা একটা চরম ভুল ধারণা।
নারীর সতীত্ব চেনার উপায়ঃ-
ওজন বাড়ানোর কিছু উপায়
‘প্রথম সহবাসকালীন রক্তপাত’ দ্বারা নারীটির সতীত্ব প্রমাণ করা যায় কিনা বা সতীত্বের যথার্থতাকে তুলে ধরে কি না, এই ব্যপারে আমি একটি আর্টিকেলটি তুলে ধরছি, যার ফলে আমাদের তরুণ যুব সমাজ (ছেলে, মেয়ে) বুঝতে পারবে নারীর প্রথম মিলনে রক্তপাতেই সতীত্ব যাচাই নয়, এর মূলে রয়েছে বিশাল ইতিহাস।
এই লেখাটি পড়লে আজকের পর থেকে সঠিক ধারণা লাভ করতে পারবে সকল শ্রেণীর মানুষ।
নারীর সতীত্ব সম্পর্কে প্রচলিত মিথ!
নারীর সতীত্ব চেনার উপায়
আমাদের দেশ সহ ভারত, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, কিছু কিছু ইউরোপীয় দেশ এবং আফ্রিকার অনেক দেশ যেমন- নাইজেরিয়া, উত্তর আফ্রিকা এবং আরও অনেক জাতি আছে যারা এই মিথ’টা ব্যাপক ভাবে পরিচিত। আর এই মিথ’টার কারণে তারা নারীকে নানা ভাবে লাঞ্চিত করে থাকেন।
তাদের ধারণা যে কোন নারীর সতীত্ব আছে কিনা সেটা প্রমাণ হবে যদি তার প্রথম মিলনে রক্তপাত হয়। অথচ জানেনা, এই প্রচলিত ধারনার মধ্যে এক বিন্দু পরিমানও সত্যতা নেই? বরং বিশাল ভুল ধারণা নিয়েই পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ও কিছু সংখ্যক নারী বসাবস করেন।
জেনে রাখা উচিত সব নারীরই প্রথম সহবাসে রুক্তপাত হয়না।
নিজেকে স্মার্ট বানাতে গড়ে তুলুন এই ২৩ টি অভ্যাস
এবং কেন হয়না সে বিষয়েও এই পোস্টে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেওয়া হবে। এবার পড়ুন:
অনেক মেয়ে আছে প্রথম সহবাসে রক্তপাত হয়, অনেক মেয়ের হয়না। কেনই বা কিছু কিছু নারীর প্রথম মিলনে রক্তপাত হয়, আর কেনই বা কিছু নারীর আদৌ রক্তপাত হয়না, সেটা বুঝতে গেলে আমাদের সবার জানা
প্রয়োজন নারীর প্রজনন অঙ্গের একটি অংশের নাম হাইমেন। মূলত যাকে আমরা বাংলায় সতী পর্দা বা সতীচ্ছদ বলে থাকি বা জানি। কিন্তু সেটার গঠন কেমন হবে বা হয় তা জানিনা। তাহলে তার সম্পর্কেও জানতে হবে, তাইতো!
হাইমেন বা সতীচ্ছদ এক ধরনের পর্দা! যেইটা সাধারণত একটি অনুত্তেজিত যোনির দৈর্ঘ্য সামনের দিকে ৬ থেকে ৬.৫ সে.মি. (২.৫ থেকে ৩ ইঞ্চি) এবং পেছনের দিকে ৯ সে.মি. (৩.৫ ইঞ্চি) তে অবস্থান করে। এই পর্দা সব সময় যোনিমুখকে ঢেকে রাখে না বা ব্লক করে না।
নারীর সতীত্ব চেনার উপায়
আসলে বলতে গেলে, সব নারীর এই হাইমেন বা সতীচ্ছদ পর্দা থাকে না। আবার হাইমেন বা সতীচ্ছদ পর্দা নারীভেদে আলাদা হয়ে থাকে। ঠিক যেমন সকল নারীদের উচ্চতা এবং ওজন, দৈহিক গঠন এক হয়না,
তেমনই নারীর হাইমেনের গঠন ও আকৃতি ভিন্ন নারীর ভিন্ন রকম হয়। কারো হাইমেন অনেক পুরু, কারো বা খুব পাতলা, কারো বা প্রাকৃতিক ভাবেই কোন হাইমেনই থাকেনা!
অনেক মেয়ের স্বাভাবিকের চেয়ে বড় হাইমেন থাকে। আবার অনেকের হাইমেন এতই ছোট থাকে যে সেটি যোনিমুখের অতি সামান্য অংশকে ঢেকে রাখতে সক্ষম হয়। যে কারনে সেই ক্ষুদ্র হাইমেন প্রথম মিলনে কোন রকম প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করে না । তবে দৈহিক বৃদ্ধির সাথে সাথে হাইমেন আপনাআপনি অপসারিত হয় বা ছিঁড়ে যায়।
অধিকাংশ নারীর ক্ষেত্রেই হাইমেন আপনাআপনিভাবে অপসারিত হয়ে থাকে। যেমন ব্যায়াম করলে, বাই-সাইকেল চালালে, গাছে উঠলে, বেশি লাফা লাফি করলে, নাচানাচি করলে, এমনকি ঘোড়ায় চড়লেও।
আরো আছে যেমন- হাইমেন বা সতীচ্ছদ নামের পর্দা যে কোন ভারী কাজ করলেও ছিঁড়ে যেতে বা উধাও হয়ে যেতে পারে। মাসিক চলাকালীন সময় ট্যাম্পুন ব্যবহার করলে হাইমেন ছিঁড়ে যেতে পারে। অথবা কেউ যদি কোনো রোমান্টিক ছবি দেখার ফলে উত্তেজিত হয়ে মৈথুন করে তাহলেও ছিঁড়তে পারে।
নারীর সতীত্ব চেনার উপায়
বিশেষ করে যাদের হাইমেন বা সতীচ্ছদ প্রাকৃতিক ভাবেই পাতলা বা ছোট, তাদের দৈহিক বৃদ্ধি ঘটার সঙ্গে সঙ্গে হাইমেনেরও অপসারিত হবার প্রবণতা বেড়ে যায়। তাই যে নারীর হাইমেন ছোট ও পাতলা, তাঁর ক্ষেত্রে প্রথম যৌনমিলনে রক্তপাত হবার সম্ভাবনা খুবই কম। কিংবা হয়ই না৷
সূতরাং যাদের হাইমেন একবার আপনাআপনি হতেই ছিঁড়ে গেছে বা অপসারিত হয়েছে, তার প্রথম বারের মিলনে কখনই রক্তপাত হবেনা।
এ বিষয়ে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নাল কর্তৃক প্রদত্ত ফলাফলও অত্যাশ্চার্যজনক তথ্য পাওয়া গেছে যে, প্রায় ৬৩% মহিলার ই প্রথম বারের যৌনমিলনে কোন রকম রক্তপাত হয়না। এছাড়াও, যে সব নারীদের রক্তপাত মিলনের ফলে হয়নি, তাদের একটা অংশই পুরু হাইমেন এর অধিকারী।
নারীর সতীত্ব চেনার উপায়
যেহেতু হাইমেন বয়ঃবৃদ্ধির সাথে দৈহিক বৃদ্ধির সাথে সাথে আপনা থেকেই অপসারিত হয়! তাই ২৪/২৫ বছরের একজন নারীর রক্তপাতের সম্ভাবনা থেকে ১৪/১৬ বছর বয়সী নারীর রক্তপাত অনেক বেশী।
সময়ের সাথে একজন মেয়ে যখন আইনগত সম্মতি প্রদানের বয়সের দিকে এগিয়ে যায় অথবা সেই বয়সি হয় অর্থাৎ ১৮, ২০ বা ২২ বছর বয়সী হয়, সেই মেয়ের হাইমেনের অধিকাংশ অংশের আপনাআপনি অস্তিত্বহীন হবার কথা কিংবা হয়েও যায়। অনেক সময় অতিরিক্ত স্বাস্থ থাকা মেয়েরও হাইমেন থাকেনা!
কী বুঝলাম? মেয়েদের প্রথম মিলনে কোন প্রকার রক্তপাত হবার সম্ভবনা নেই বা খুবই কম!
যদি কোন নারী শারীরিকভাবে কর্মঠ হয়ে থাকে অথচ ক্ষুদ্র অথবা পাতলা হাইমেন এর অধিকারী হয়ে থাকে, তার প্রথম বারের মিলনে রক্তপাত নাও হতে পারে কিংবা হবেনা।
★তাই অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায়, যেসব নারীর প্রথম সহবাসেই রক্তপাত হয়েছে, তাদের সাথে জোর বা জবরদস্তির এমন কি তাদের যৌন উত্তেজনা উঠার আগেই যৌনকার্য সংঘটিত হয়েছিলো!
যদি কোন নারী যথেষ্ট পরিমানে উত্তেজিত না থাকে, বা শিথিল না থাকে কিংবা যৌনমিলনের জন্য শারীরিক ও মানসিক ভাবে তৈরী না থাকে, সেক্ষেত্রে পুরুষ সঙ্গী যদি তার ওপর জোরপূর্বক সহবাস ঘটায়, তাহলে সেই মেয়ের যোনি পথে সেই পুরুষ টি মূলত ক্ষতের সৃষ্টি করে যা থেকে রক্তপাত হয়।
অদ্ভুতভাবে অধিকাংশ লোকেরই এটাই ধারণা যে, নারীর প্রথম মিলনে রক্তপাত হওয়াই স্বাভাবিক, অথচ কেউ এটা বোঝেনা যে, রক্তপাত হচ্ছে নারীর উপর জোরপূর্বক যৌনমিলনে কৃত আঘাতেরই ফলাফল।★
(উপরের প্যারা তিনটা আবার পড়ুন)
নারীর সতীত্ব চেনার উপায়
প্রথম মিলন পূর্বক হাইমেন ছিড়ে যাবার কারনে নয়, বরং সেই নারী টি যথেষ্ট পরিমানে কামার্ত বা উত্তেজিত ছিলনা বা শিথিল ছিলনা, ফলত সেই কারনে পুরুষ অংগ দ্বারা তার অভ্যান্তর ক্ষতবিক্ষত হয়েছিল। আর পরিসংখ্যান অনুযায়ী, হাইমেন ছিড়ে রক্তপাতের ঘটার সংখ্যাও ভীষণ কম।
সবকিছুর শেষে বলতে চাই যে, নারীর সতীত্ব নির্ধারন করার কোন “আসল” উপায় যেমন বাস্তবে নেই। রক্তপাতের সাথে সতীত্বের কোন সম্পর্কও নেই।
বরং সতীত্বের সম্পর্ক নারীর হাইমেনের গঠনের সাথে, যে হাইমেনের গঠন জন্মের পর থেকেই এক নারী হতে আরেক নারীর দেহে ভিন্ন হয়ে থাকে।
নারীর সতীত্ব ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালের গবেষণার ফলাফল
ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালের গবেষণার ফলাফল হিসাবে জানা গেছে যে, মাত্র ৩৭% নারী প্রথম মিলনে রক্তপাতের অভিজ্ঞতা লাভ করে। তাহলে এবার আমরা আপনার ভাবা উচিত- আমাদের এই স্পর্শকাতর বিষয়ে এত সচেতন থাকা কী খুবই গুরুত্বপূর্ন? নাকি খুব স্বাভাবিক একটা বিষয়?
হয়তো আমরা জানি সারা পৃথিবীতেই নারী তার ‘প্রথম মিলনে রক্তপাত’ নামক প্রচলিত ধারণার কারনে লাঞ্চিত, নির্যাতিত, অসম্মানিত এমনকি হত্যাকান্ডের শিকারও হন।সমাজ,পরিবার থেকে ঘৃনিত হয়ে থাকে।
যে সব নারীর প্রথম মিলনে রক্তপাত হয় না, তারা হয় তালাকপ্রাপ্ত হন, অথবা অযাচিত সন্দেহের বশবর্তী হয়ে ক্রমাগত পারিবারিক সহিংসতা আর নির্যাতনের শিকার হন এমন কি পারিবারিক সম্মান বজায় রাখার স্বার্থে খুন পর্যন্ত হন। হয়তো অনেক সমাজে বেশ্যা বা পতিতা নাম বসে যায় টাইটেল হিসাবে৷
সূতরাং আমাদের এই শিক্ষাটি অবশ্যই থাকতে হবে, সকল নারীরই প্রথম মিলনে রক্তপাত নাও হতে পারে; কারণ সব নারী পুরু সতীচ্ছদ পর্দা/হাইমেনের অধিকারী নন, কিংবা এমন রক্তপাত হবে হাইমেন নিয়ে জন্মও হয়নি। তাই অনেকেরই জন্মগতভাবেই কোন সতীচ্ছদ পর্দা নেই।
এই ধারণা বা শিক্ষাটি আসলে অনেক নারীর জীবনকেই রক্ষা করবে। বরং পুরুষরা জানার পর আজকের দিন ওয়াদা করবো যে জোর পূর্বক সহবাস থেকে বিরত থাকবো।
নারীর সতীত্ব চেনার উপায় ছোট কথাঃ
নারীর শরীর সম্পূর্ন উত্তেজিত না হলে সহবাসে যাওয়া উচিত নয়। এটাও প্রতিটি যুবক, পুরুষ সকলের জানা উচিত। আসুন নারীকে ভালোবাসি, সম্মান করি৷ আপনার মা, বোন সবাই আদর্শ নারী।
জনসচেতনতা সৃষ্টিতে লেখাটি ছড়িয়ে দিন যতটা সম্ভব। আমি পাশে থাকবো যদি আপনি পাশে থাকেন৷ আমি এবং আপনি পাশে থাকলে একজন নারী পাবে পূর্ণ স্বাধীনতা ও আদর্শিক ভাবে বেঁচে থাকার প্রয়াস! ধন্যবাদ৷
Pingback: How To Make Pudding Recipe Tips (Assignment) - HealthAnyTips.Com
Pingback: SSC Exam Routine 2021 - HealthAnyTips.Com
Pingback: HSC Exam Routine 2021 - HealthAnyTips.Com
Pingback: যে আমলে দুশ্চিন্তা দূর হয় - HealthAnyTips.Com
Pingback: বিয়ে করার ১৫ টা উপকারিতা - HealthAnyTips.Com
Pingback: Banglalink Bondho Sim Offer October 2021 - HealthAnyTips.Com