Table of Contents
যে আমলে দুশ্চিন্তা দূর হয়
মানুষ প্রতিটি মুহূর্তে আল্লাহর লাখো নিয়ামতে ডুবে থাকে। যা অনুভব করতে পারে প্রকৃত মুমিনরাই। তারা সর্বদা মহান আল্লাহর নিয়ামতের শোকরিয়ায় মত্ত থাকে। তারা কখনো না পাওয়া ও বঞ্চিত হওয়ার মর্মপীড়ায় ভোগে না।
বরং যা পেয়েছে তা নিয়েই তুষ্ট থাকে। অল্পে তুষ্টি মুমিনের ভূষণ। কারণ একজন মুমিনের কাছে সম্পদের সচ্ছলতা মুখ্য নয়। প্রকৃতপক্ষে মনের সচ্ছলতাই বড় সচ্ছলতা।
একদিন হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) হজরত আবু জর (রা.)-কে বললেন, আবু জর! তুমি কি সম্পদের প্রাচুর্যকেই সচ্ছলতা মনে করো? আবু জর (রা.) বলেন, হ্যাঁ, হে আল্লাহর রাসুল!
রাসুলুল্লাহ (সা.) এরপর বলেন, তাহলে তুমি সম্পদের স্বল্পতাকে দারিদ্র্য মনে করো? তিনি বলেন, হ্যাঁ, হে আল্লাহর রাসুল! রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, আসলে সচ্ছলতা তো হৃদয়ের সচ্ছলতাই, আর হৃদয়ের দারিদ্র্যই আসল দারিদ্র্য।
(ইবনে হিব্বান: ৬৮৫)
নারীর সতীত্ব চেনার উপায়
দুনিয়ার পুরো সম্পদ দিয়েও কোনো মানুষকে খুশি করা সম্ভব নয়। সাধারণত মানুষের চাহিদার কোনো শেষ নেই।
যার কাছে সাইকেল আছে, তার মোটরসাইকেলের চাওয়া-পাওয়া থাকে, যে মোটরসাইকেলের মালিক তার স্বপ্ন থাকে একটি গাড়ির, আবার যার গাড়ি আছে তার মনে হয় আমার যদি একটা হেলিকপ্টার থাকত! এভাবেই পৃথিবীর প্রতিটি মানুষই অভাবী।
যারা আল্লাহর নিয়ামতের শোকরিয়া আদায় করতে জানে না, তারা চির দরিদ্র। তাদের দরিদ্রতা মোচনের কোনো সম্পদই যেন দুনিয়াতে সৃষ্টি হয়নি। তাদের চাহিদার লাগামে টান দিতে পারে একমাত্র মৃত্যু।
আদমসন্তানের কেউ যদি দুই উপত্যকা ভর্তি সম্পদের মালিক হয় তাহলে সে আরেক উপত্যকা সম্পদ তালাশ করতে থাকে। শুধু মাটিই আদমসন্তানের উদর পূর্ণ করে দিতে পারে!
(বুখারি, হাদিস: ৬৪৩৬)
সম্পদের প্রতি এ অস্থির লালসা মানুষের স্বভাব। তবে এ স্বভাব আর স্বাভাবিকতাকে যারা জয় করতে পারে, নিজের সম্পদ কমবেশি যতটুকুই হোক তাতেই যারা তৃপ্ত, কষ্টকর এ দুনিয়ার জীবন তাদের জন্য হয়ে ওঠে অনেক বেশি সুখকর।
এভাবে তৃপ্ত থাকার এ গুণটিকে ‘কানাআত’ বা ‘অল্পে তুষ্টি’ বলে।
সুরা তাওবার ৫৯ নং আয়াতের প্রথমাংশে মহান আল্লাহ বলেন, ভালো হতো, তারা (মুনাফিকরা) যদি আল্লাহ ও তাঁর রাসুল যা দিয়েছেন তাতে পরিতুষ্ট হতো।
অল্পে তুষ্টি জীবনকে উপভোগ্য করে তোলে। সেই উপভোগ্য জীবনকে গড়তে ইসলাম দিয়েছে ভারসাম্যপূর্ণ ও মধ্যমপন্থার জীবনদর্শন।
বাড়াবাড়ি-ছাড়াছাড়ি কোনোটিই অনুমোদিত নয় ইসলামে। পবিত্র কোরআনুল কারিমে ইরশাদ হয়েছে, ‘এভাবেই আমি তোমাদের মধ্যপন্থী সম্প্রদায় করেছি।’
(সুরা বাকারা, আয়াত: ১৪৩)
তাই অল্পে তুষ্টি অর্জনের নামে এতটাই দুনিয়াবিমুখ হলে চলবে না যে নিজের সন্তান-সন্ততিদের পরের দুয়ারে গিয়ে দাঁড়াতে হবে।
রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, তুমি তোমার ওয়ারিশদের অসহায় অবস্থায় রেখে যাওয়ার চাইতে ধনী অবস্থায় রেখে যাওয়া ভালো।
নিজেকে স্মার্ট বানাতে গড়ে তুলুন এই ২৩ টি অভ্যাস
(বুখারি, হাদিস: ১২৯৫)
উপরোক্ত হাদিস দ্বারা বোঝা যাচ্ছে, সন্তানকে ভিখারিবেশে রেখে যাওয়ার চাইতে বিত্তবান রেখে যাওয়া ভালো।
তবে শুধু এই হাদিসকে সামনে রেখে উপার্জনের ক্ষেত্রে এতটাই বুঁদ হওয়া যাবে না যে হালাল-হারামের তওয়াক্কা থাকবে। আল্লাহর নিয়ামতে শোকরিয়া থাকবে না।
রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, হে মানুষেরা, আল্লাহকে ভয় করো আর রিজিক অন্বেষণে সহজতা অবলম্বন করো। কারণ কেউ তার জন্য নির্ধারিত রিজিক পূর্ণরূপে গ্রহণ করার পূর্বে কিছুতেই তার মৃত্যু হবে না।
তাই আল্লাহকে ভয় করো এবং জীবিকা অন্বেষণে সহজতা অবলম্বন করো। যা কিছু হালাল তা গ্রহণ করো আর যা হারাম তা বর্জন করো।
(ইবনে মাজাহ, হাদিস: ২১৪৪)
তাই দুনিয়ার চাকচিক্য দেখে হতাশায় না ভুগে প্রাপ্ত নিয়ামতের ওপর আল্লাহর শোকরিয়া জ্ঞাপন করা দরকার।
কারণ মানুষ তার জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্ধারিত রিজিক না ভোগ করে যেমন দুনিয়া থেকে যাবে না, তেমন অতিরিক্ত লোভ-লালসা করে নির্ধারিত রিজিকের বেশিও অর্জন করতে পারবে না।
Pingback: মসজিদসংলগ্ন ধর্ম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান - HealthAnyTips.Com